সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে স্বাস্থ্য খাতের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা এবং তা পরের অর্থবছরের এডিপিতে হবে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। যার মানে হলো এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে মাত্র ৭৯৭ কোটি টাকা।
এমন এক সময়ে এসে এ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে যখন দেশের স্বাস্থ্য খাত মহামারি কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের জন্য আরও বড় ধরনের বরাদ্দের আশা করা হয়েছিল।’
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এ বরাদ্দের জন্য খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে এবং এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সামনে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অধীনে ৫৭টি প্রকল্পের কাজ চলছে।
গত মাসে বিশেষ বিবেচনায় করোনাভাইরাস সম্পর্কিত একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছিল। এছাড়া পরবর্তী এডিপির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন করা হয়নি। ফলে, আগামী অর্থবছরের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পগুলোই এ বরাদ্দ পাবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ইউএনবিকে বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো এ বরাদ্দ আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল। তবে, আমার একার কথায় এটি হতে পারে না, এর সাথে অন্য আরও অনেক অংশীজন জড়িত রয়েছেন। আগামীকালের (মঙ্গলবার) বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এডিপির খসড়া চূড়ান্ত করতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বর্ধিত সভা মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় আমি আমার মতামত দেব এবং অন্য অংশীজনরাও তাদের মতামত দেবেন।’
পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনইসির সভায় এডিপি প্রস্তাবের চূড়ান্ত খসড়া উপস্থাপন করা হবে।
নিয়ম অনুসারে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলো তাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো তৈরি করে এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সেগুলো পরিকল্পনামন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য খাতের জন্য চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) এডিপি বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। যেখানে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১০ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মতে, এবারের এডিপির মোট আকার হবে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। যেখানে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাবে পরিবহন খাত ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি, বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং শিক্ষা খাতে ২৩ হাজার কোটি টাকার কিছুটা কম বা বেশি হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন ধরনের যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয় বলে কোনো প্রকল্পের অনুমোদন পেতে যথেষ্ট সময় লাগে, তবে স্বাস্থ্য খাতটি উন্নয়ন প্রকল্পের চেয়ে অ-উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রেই বেশি বরাদ্দ পাবে।